আহত খোকন বসাক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসাধীন। তাঁর বাম হাত, বুক, পিঠ ও মুখের একাংশ পুড়ে গেছে।
তবে পোড়া ক্ষতের যন্ত্রণার চেয়েও স্বজন হারানোর কষ্ট খোকনকে বেশি ভোগাচ্ছে। যে ছেলেমেয়ে তাঁকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিয়েছে, তাদের বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ পোড়াচ্ছে খোকনকে।
আজ শুক্রবার দুপুরে তাঁর সঙ্গে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘একটি ঘরের কক্ষে আমার মা ও ছেলেমেয়ে দুটি ঘুমাত। আমার বাবা অন্য একটি ঘরে। আরেক ঘরে আমরা স্বামী–স্ত্রী থাকতাম। পাশের ঘর থেকে ডেকে আমার ছেলেমেয়ে আমাদের ঘুম থেকে তুলে দেয়, বলেছে বাবা আগুন। এরপর বারান্দায় জড়ো হই। কিন্তু বাইরে বের হওয়ার ফটক যে পথে, সে পথে যাওয়ার দরজা খুলে দেখি প্রচণ্ড আগুনের হলকা আসছে। এর মধ্যে আমি তাদের পেছন পেছন আসতে বলে দৌড় দিই বাইরে। কেউ বের হতে পারেনি আর।’
খোকন বসাকের বাবা কাঙ্গাল বসাক (৬৮), মা ললিতা বসাক (৫৭), স্ত্রী লাকি বসাক (৩৩), ছেলে সৌরভ বসাক (১২) ও মেয়ে শায়ন্তী বসাক (৬)। ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে ও মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
সেমিপাকা টিনশেডের ঘরটিতে দেড় বছর ধরে থাকতেন খোকনরা। তাঁরা তিন ভাই। অপর দুই ভাই অন্য জায়গায় থাকেন। খোকন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান। সিএনজিটি থাকে রান্নাঘরের পাশে। রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খোকন বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টায় ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। বাচ্চাদের ডাকে উঠে দেখি তখন রাত পৌনে দুটা। রান্নাঘর ও বারান্দার এক পাশে আগুন। তা আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে। সিএনজিটিও জ্বলছে। জানি না কীভাবে আগুন লেগেছে। তবে মনে হচ্ছে চুলা থেকে ঘটেছে।’
খোকন বলেন, ঘর থেকে বের হয়ে নিজে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন খোকন। তখনো তাঁর পিঠে আগুন জ্বলছিল। কিন্তু স্বজনদের বাঁচাতে তাঁর সেদিকে খেয়াল ছিল না।
Leave a Reply